আমাদের সংস্কৃতি ভুলে যাওয়া উচিত নয় – মহাকুম্ভে বিদ্যুৎ জামওয়াল
প্রয়াগরাজ (উত্তরপ্রদেশ), ১১ ফেব্রুয়ারি (ANI): জনপ্রিয় অভিনেতা বিদ্যুৎ জামওয়াল সম্প্রতি মহাকুম্ভে উপস্থিত হয়ে ভারতের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, পশ্চিমা সংস্কৃতির দিকে এগিয়ে যাওয়া খারাপ নয়, তবে আমাদের নিজেদের সংস্কৃতি ভুলে যাওয়া উচিত নয়।
মাতৃস্বপ্ন পূরণে মহাকুম্ভে বিদ্যুৎ
বিদ্যুৎ জামওয়াল তাঁর মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতেই মহাকুম্ভে এসেছেন। ANI-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমার মা স্বপ্ন দেখেছিলেন যে একদিন মহাকুম্ভে এসে পবিত্র স্নান করবেন। তাই আমি এখানে এসেছি। এটি এক পরম পবিত্র স্থান।
তিনি আরও বলেন, আমরা অভিনেতা, বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করি, কিন্তু দিনশেষে আমরা সকলেই সনাতনী। আমাদের যুবসমাজের দায়িত্ব নেওয়া উচিত পরিবার, সমাজ এবং সংস্কৃতির প্রতি। সময় এসেছে, আমাদের সংস্কৃতির অংশ হিসেবে যোগব্যায়ামকে ফিরিয়ে আনতে হবে।
বিশ্বের বৃহত্তম আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক সমাগম: মহাকুম্ভ ২০২৫
মহাকুম্ভ ২০২৫ বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উৎসব হিসেবে পরিণত হয়েছে। পবিত্র তিথিতে লাখো সাধু, তীর্থযাত্রী ও সাধারণ মানুষ ত্রিবেণী সঙ্গমে স্নান করছেন।
আরও :- স্টিয়াল স্টিভেন: চীনে উন্মোচিত প্রথম হিউম্যানয়েড রোবট, সূক্ষ্ম পালিশের ক্ষেত্রে এক নতুন যুগ
আরও :- এলন মাস্কের সিদ্ধান্তে মার্কিন শিক্ষা গবেষণায় ধাক্কা – IES-এর বাজেট থেকে ৯০০ মিলিয়ন ডলার কাটছাঁট!
আরও : আমাদের সংস্কৃতি ভুলে যাওয়া উচিত নয় – মহাকুম্ভে বিদ্যুৎ জামওয়াল
আরও : Elon Musk বনাম Sam Altman: OpenAI নেতৃত্বের লড়াই ও নতুন বিতর্ক
প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, মহাকুম্ভের সমাপ্তির ১৫ দিন আগেই তীর্থযাত্রীদের সংখ্যা ৪৫০ মিলিয়ন (৪৫ কোটি) ছাড়িয়ে গেছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত প্রায় ৫০ লাখ ভক্ত ত্রিবেণী সঙ্গমে পবিত্র স্নান করেছেন। আগামী গুরুত্বপূর্ণ স্নান উৎসবগুলোর পর মোট তীর্থযাত্রীদের সংখ্যা ৫০০ মিলিয়নেরও বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতি
মহাকুম্ভে ইতিমধ্যেই অংশ নিয়েছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথসহ অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি।
শুধু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বই নন, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি, তাঁর পুত্র অনন্ত আম্বানি এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও মহাকুম্ভে অংশ নিয়েছেন।
ভারতের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের জয়গান
বিদ্যুৎ জামওয়াল মনে করেন, আধুনিকতাকে গ্রহণ করা ভালো, তবে নিজের শিকড় ভুলে গেলে চলবে না। ভারতীয় সংস্কৃতি বিশ্বকে পথ দেখিয়েছে এবং তা ধরে রাখাই আমাদের দায়িত্ব। “সংস্কৃতি আমাদের পরিচয়, আমাদের শিকড়। একে ভুলে গেলে আমরা নিজেরাই হারিয়ে যাব,” তিনি বলেন।
মহাকুম্ভ শুধুমাত্র ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি ভারতের বহুবিধ সাংস্কৃতিক, আধ্যাত্মিক ও ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের প্রতিচ্ছবি। দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ এখানে আসেন, ভক্তি ও বিশ্বাসের অনন্য এক পরিবেশ তৈরি হয়।
মহাকুম্ভ ২০২৫: আধ্যাত্মিকতার শীর্ষবিন্দু
এবারের মহাকুম্ভ ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ (পৌষ পূর্ণিমা) থেকে শুরু হয়েছে এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (মহাশিবরাত্রি) পর্যন্ত চলবে। এটি কেবলমাত্র ভারত নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকেও লাখো তীর্থযাত্রীদের আকৃষ্ট করছে।
মহাকুম্ভ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে সংস্কৃতি, আধ্যাত্মিকতা ও ঐতিহ্য আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিদ্যুৎ জামওয়ালের মতো তারকারাও যখন এগিয়ে এসে সংস্কৃতির প্রচার করেন, তখন তা তরুণ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে।
উপসংহার
আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষা করা শুধু অতীতকে সম্মান জানানো নয়, বরং ভবিষ্যতের জন্য একটি দায়িত্বও বটে। মহাকুম্ভের মতো বিশাল উৎসব আমাদের সেই দায়িত্বের কথা বারবার স্মরণ করিয়ে দেয়। তাই, পশ্চিমা সভ্যতার প্রতি আকর্ষণ থাকা স্বাভাবিক হলেও, আমাদের নিজেদের শিকড় ভুলে গেলে চলবে না। কারণ, সংস্কৃতি আমাদের আত্মপরিচয়।
Responses